করোনা সংক্রমণে ঊর্ধ্বগতি দেখা দেয়ায় ফ্রান্সে শুক্রবার (২৮ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে সবার মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করা হয়েছে।রাস্তাঘাটে চলাচলকারী সমস্ত পথচারী, সাইকেল, দু-চাকার গাড়ি, মোটরসাইকেল, স্কুটার এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারকারী সকলকেই মাস্ক বাধ্যতামূলক পরতে হবে।
স্বাস্থ্যের দায়িত্বে থাকা প্যারিসের ডেপুটি মেয়র অ্যান সৌরিস গণমাধ্যমকে এ ঘোষণা দেন। এ আইন অমান্যকারীকে ১৩৫ ইউরো জরিমানা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জ্যাঁ ক্যাসটেক্স দেশজুড়ে রাজধানী প্যারিস, মার্শেইলসহ নতুন করে আরও ১৯টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় দেশটিতে ‘রেড জোন’ ঘোষিত এলাকার সংখ্যা দাঁড়ালো ২১টিতে। রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করার কারণে ঐ সব এলাকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব এলাকায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা ছাড়াও বার ও রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে ৬ হাজার ১১১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার, যা মধ্য এপ্রিল তথা ১৩৫ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চব্বিশ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৩২ জন মারা গিয়েছে।গত বুধবারে ও ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৫ হাজার ৪২৯ জন আক্রান্ত হয়েছে।
বিগত দুইমাসে ফ্রান্সে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসায় ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্স সরকার কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে আবারো ভয়ঙ্কর রূপে করোনাভাইরাস ফিরে আসায় সরকার এখন স্কুলের ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেয় তা দেখার অপেক্ষা।
এদিকে, নতুন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জনসাধারণকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জিন কাটেক্স, “করোনা মহামারি মোকাবিলা করাটা প্রত্যেককে দায়িত্ব হিসেবে অনুভব করতে হবে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমাদেরকে অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে। আমরা আরও বেশি মানুষের নমুনা পরীক্ষা করছি। কিন্তু পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করেই সবকিছুর ব্যাখ্যা করা যাবে না। করোনা পজিটিভ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। মে মাসে লকডাউন প্রত্যাহারের পর পজিটিভের সংখ্যা ছিল ১ শতাংশ; যা এখন ৩.৭ শতাংশ।’
পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার এর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় কিংবা জাতীয়ভাবে ফের লকডাউনের পরিকল্পনাও করে রেখেছে সরকার। কিন্তু তিনি বলেছেন, লকডাউন না করে কীভাবে নতুন করে শুরু হওয়া এই সংক্রমণ রোধ করা যায় এর জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে।
ফ্রান্সে বর্তমানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯৮ জন। মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ৫৭৬ জন।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪ হাজার ৫৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তার মধ্যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র অর্থাৎ আইসিইউতে ৩৮১ জন ছিল ।