কক্সবাজারে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর অফিসের সামনে এক রোহিঙ্গা যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। পরে ইউএনএইচসিআর-এর কর্মকর্তা, নিরাপত্তারক্ষী, গণমাধ্যম কর্মী ও টহল পুলিশ আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ঐ যুবককে বুঝিয়ে শুনিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়।
ক্যাম্প সিআইসি, পুলিশের হয়রানি ও পারিবারিক বিরোধের বঞ্চনার বিচার চাইতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইসসিআর) কক্সবাজার সাব অফিসে আসেন রোহিঙ্গা যুবক আবুল ওসমান। তখন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ওই যুবক সড়কে শুয়ে পড়েন। স্বপরিবারে আত্মহত্যার হুমকি দেন।
বুধবার রাত ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই যুবক উখিয়ার কুতুপালং নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরের ই-ব্লকের ৪০ নাম্বার শেডের বাসিন্দা এহসানুল হকের ছেলে। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী, সন্তান, ভাই ও মা ফাতেমা বেগম।
ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা আবুল ওসমান বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে ক্যাম্প সিআইসি ও পুলিশ হয়রানি করছে নিয়মিত। পাশাপাশি রেশন নেয়া বন্ধ। নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে যে সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তার কিছুই দেয়া হচ্ছে না। তারপরও নির্যাতনের বিচার চাইতে ইউএনএইচসিআরের সাব অফিসে আসি। কর্মকর্তারা বারবার আশ্বস্ত করে। কিন্তু কোনো সমাধান দেয় না। এভাবে তাদের অবহেলার কারণে প্রতিদিন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’
এনজিওতে চাকরি করার কারণে কথিত আরসা নেতাদের হুমকি পেতে হচ্ছে জানিয়ে এ যুবক বলেন, ‘৩২ বছর ধরে তারা আমাদের (ইউএনএইচসিআর) নিয়ে কাজ করছে। নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে নিরাপত্তা দেয়ার কথা থাকলেও তার কোনো কিছুই করছে না। আমি বার বার অভিযোগ করার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি এখন স্ব পরিবারে আত্মহত্যা করবো।’
তার মা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘ওসমানের বাবা আরেকটি বিয়ে করে। ওই নারী আমার সন্তানদের হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিক বার হামলা করে লোকজন নিয়ে। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ দেয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখন পুরো পরিবার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছি। উল্টো তারা আমার ছেলেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে হেনস্তা করছে। ইউএনএইসসিআর অফিসেও কয়েক দফা বলার পরও সমাধান হচ্ছে না বা করছে না তারা। এখন কোথায় যাবো?’
ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিন বলেন, ‘সিনিয়র স্যারদের সঙ্গে কথা বলে তারা বের হন। এক পর্যায়ে ওই যুবক সড়কে শুয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর আমরা তাকে বুঝিয়ে একটি ইজিবাইকে তুলে দিয়েছি।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইউএনএইচসিআর, কক্সবাজার কার্যালয়ের লিয়াজো অফিসার ইখতিয়ার উদ্দিন বায়েজীদ বলেন, ‘নিবন্ধিত রোহিঙ্গা পরিবারটি বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। তাদের সঙ্গে কথার এক পর্যায়ে সে (ওসমান) অফিসের সামনের সড়কে বেরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’