কুষ্টিয়ায় হাসিনুর রহমান (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্য দিবালোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামের নিজ বাড়ির সামনে তাকে হত্যা করা হয়। এ সময় জব্বার নামে আরেকজন আহত হন। হামলাকারী মুজিবুর রহমান বয়াতিকে আটক করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, হাসিনুর রহমান কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. আ. কা. ম সারওয়ার জাহান বাদশার ফুপাতো ভাই।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, একটি খুনের ঘটনা মীমাংসার মধ্যস্থতার চেষ্টা করছিলেন এই হাসিনুর। এর জের ধরে তাকে খুন করা হতে পারে বলে সূত্রগুলো জানায়।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, হাসিনুর রহমান সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সাংসদের অবর্তমানে তার ব্যক্তিগত ও দলীয় কাজকর্ম হাসিনুর দেখভাল করতেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জব্বার নামে একজনের মোটরসাইকেলে চড়ে নিজ বাড়ি থেকে তিনি স্থানীয় বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাড়ির পাশেই একটি দোকানের কাছে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মজিবুর রহমান বয়াতি তার ওপর আচমকা হামলা চালায়। হামলাকারী রামদা দিয়ে হাসিনুরের শরীরে বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকলে এক পর্যায়ে তিনি মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারী পালিয়ে যায়। এসময় মোটরসাইকেলের চালক জব্বার আলী আহত হন।
জানা গেছে, বছরখানেক আগে মজিবুর রহমান বয়াতির এক বছর বয়সী ছেলে খুন হয়। সে সময় মজিবর রহমান এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করেন দৌলতপুর থানায়। মামলার আসামিরা সবাই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। স্থানীয়রা জানায়ন সাংসদের প্রতিনিধি হিসেবে হাসিনুর রহমান এই হত্যা মামলাটি মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মজিবুর রহমান বয়াতি এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকেন এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা তার বাড়িতে ভিড় করেছেন। এলাকায় যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক মাহবুবুর রহমান জানান, নিহত হাসিনুর রহমান সাদামাটাভাবে জীবনযাপন করতেন। তিনি মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পছন্দ করতেন। মানুষের প্রয়োজনে পাশে থাকতেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন।
দৌলতপুর থানার ওসি নিশিকান্ত জানান, ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ঘটনার পরপরই হামলাকারী মজিবর রয়াতিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।