মিথ্যা তথ্য দিয়ে দুইবার ভোটার হওয়া এবং দু’টি জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর (সাবরিনা শারমিন হোসেন) বিরুদ্ধে মামলা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ইসির গুলশান থানা কার্যালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করে দিয়েছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ।
এ বিষেয় ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনের ১৪ ও ১৫ ধারা অনুযায়ী সাবরিনার বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে গুলশান থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দুদকের চিঠির জবাব দেওয়া হয়েছে। তার দুইটি এনআইডি ব্লক করা হয়েছে। এছাড়া ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এই জালিয়াতির সঙ্গে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার সাবরিনার দু’টি জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুটিতেই তার নাম সাবরিনা শারমিন হোসেন। তবে ঠিকানা ও জন্ম তারিখ ভিন্ন। বিষয়টি দুদকের পক্ষ থেকে ইসিকে জানানো হয়। এরপর আজ ইসি বিষয়টি খতিয়ে দেখে মামলা করা এবং এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেদের কোনো কর্মকর্তা জড়িত কি না, সেটা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
ভোটার তালিকা আইন ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন অনুযায়ী দ্বৈত ভোটার হওয়া বা ভোটার হওয়ার চেষ্টা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এতে জেল-জরিমানার বিধান আছে।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে মোহাম্মদপুরে প্রথমবার ভোটার হন সাবরিনা শারমিন হোসেন। ওই এনআইডিতে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা-১২২/ক, মোহাম্মদপুর পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি। জন্ম তারিখ-২ ডিসেম্বর ১৯৭৮। মাতার নাম কিশোয়ারা জেসমিন, স্বামীর নাম এইচ হক। পেশা সরকারি চাকরি আর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর। অন্যদিকে আগের ভোটার হওয়ার তথ্য গোপন এবং মিথ্য তথ্য দিয়ে ২০১৬ সালে পুনরায় গুলশানে ভোটার হন সাবরিনা। এই ভোটার নম্বর ২৬১১১৫৫০০২৩২৫। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা-১৪/এ, আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক, প্রগতী স্বরনী, বাড্ডা এখানে তার জন্ম তারিখ ২ ডিসেম্বর ১৯৮৩। অর্থাৎ ৫ বছর বয়স কমিয়েছেন তিনি। মাতার নাম জেসমিন হোসেন আর স্বামী আরিফুল চৌধুরী। মাতার ও স্বামীর নামে পরিবর্তন হয়েছে। এছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতা কমিয়ে স্নাতক উল্লেখ করা হয়েছে। আগের এনআইডিতে সনাক্তকারী কোনো চিহ্ন না থাকলেও দ্বিতীয় এনআইডিতে ‘চিবুকে তিল’ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।