টাকা ছাড়াও ডলার, পাউন্ডসহ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে; রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে টাকা গণনার কাজ চলছে।
শনিবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানসিন্দুক খোলা হয় বলে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পাগলা মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মিয়া জানান।
সিন্দুক থেকে টাকা বের করার পর বস্তায় ভরা শুরু হয়; একে একে ১৫টি বস্তায় টাকা গোছানো শেষে শুরু হয় গণনা। কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার তত্ত্বাবধানে প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে টাকা গণনার কাজ চলছে।
এ কাজে মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মী, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য কাজ করছেন। দানসিন্দুকে টাকা ছাড়াও ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, দিনার, রিঙ্গিত ও দিনারসহ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে।
চলতি বছরের ২ জুলাই সবশেষ পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক খোলার পর পাওয়া যায় ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা। এ ছাড়া আরও জমা পড়েছিল বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।
বিকালের মধ্যে টাকা গণনার কাজ শেষ হবে জানিয়ে পাগলা মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ বলেন, “সব টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হবে। এ টাকা থেকে পাগলা মসজিদ এবং এই মসজিদ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়।
“তাছাড়া জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুঃস্থদের মাঝে আর্থিক সহায়তা এবং বিভিন্ন সামাজিক কাজেও টাকা প্রদান করা হয়।”
পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স ঘিরে এখানে একটি বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে, এটি বাস্তবায়ন হলে মসজিদ কমপ্লেক্স আরও দৃষ্টিনন্দন হবে বলে তিনি জানান।
সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জে অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গাজুড়ে রয়েছে।
মসজিদ কমপ্লেক্সের অধীনে আছে মাদ্রাসা ও এতিমখানা।
কথিত আছে, ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক একজন ব্যক্তি নদীর তীরে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।