Friday , December 13 2024
Breaking News

প্রতারণায় সর্বস্ব হারিয়ে বিজিবি সদস্যের সংবাদ সম্মেলন

প্রতারকের প্রতারণায় সর্বস্ব হারিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক বিজিবি সদস্য ও দুই ব্যবসায়ী।

প্রতারণায় সর্বস্ব হারিয়ে মিথ্যা মামলার আসামি এখন বিজিবি সদস্য। তাঁর সঙ্গে আছেন আরও দুই ব্যবসায়ী। পরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁরা। ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য আবুল কালাম তালুকদার। উপস্থিত ছিলেন অন্য দুই ভুক্তভোগী গীতা ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক প্রদীপ কুমার সাহা ও মেহেদী হাসান মামুন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ‘মিথ্যা মামলায় শুধু সাধারণ মানুষকে হয়রানিই করা হয় না, যারা তার মামলায় পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা থাকেন’ তাদেরও আসামি করে নাজেহাল করা হয়।’

অভিযুক্ত ওই প্রতারকের নাম ডা. রাকিব হাসান শুভ ওরফে হাবিবুর রহমান। তিনি প্রতারণার মামলায় বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আবুল কালাম তালুকদার বলেন, ‘ডা. রাকিব হাসান শুভ ওরফে হাবিবুর রহমান আমার বাসার পাশে ভাড়া থাকতেন। সেই সুবাধে পরিচয়। তিনি নিজেকে চিকিৎসক, বড় ঠিকাদার, পুলিশ ও জেলখানার রেশন সাপ্লাইয়ার হিসেবে পরিচয় দিতেন। একপর্যায়ে বলেন, আপনি তো অবসরে চলে এসেছেন, আসেন আমরা ব্যবসা করি।’

আবুল কালাম আরও বলেন, ‘অবসরকালীন সময়ে কী করব ভেবে আমিও ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিই। ওই প্রতারকের সঙ্গে ডিড হয় এবং চেকের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে মোট ৬৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা নেন। টাকা নেওয়ার পরই জানতে পারি তিনি একজন প্রতারক। টাকা চাইলে ফেরত তো দেনই না, বরং রাজবাড়ী আদালতে আমাদের নামে উল্টো মিথ্যা মামলা করেছেন।’

লিখিত বক্তব্যে আবুল কালাম তালুকদার জানান, এই টাকাটা তাঁর জীবনের শেষ সম্বল ছিল। তিনি এখন নিঃস্ব। খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। 

লিখিত বক্তব্য আরও জানানো হয়, পুলিশের রেশন ডাল সাপ্লাই দেওয়ার জন্য গীতা ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক প্রদীপ কুমারের কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকার ডাল বাকি নিয়ে কোনো টাকা পরিশোধ করেননি। পরবর্তী সময়ে আরও ডাল বাকি চাইলে তিনি দিতে রাজি না হওয়ার তাঁর বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা করেন। একইভাবে ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান মামুনের কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে মোট ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।  

সংবাদ সম্মলনে জানানো হয়, ডা. রাকিব হাসান শুভর আসল নাম হাবিবুর রহমান। তিনি চিকিৎসা বিদ্যা না জেনেও নিজেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় দিতেন বলে পরে জানা গেছে।

সংবাদ সম্মলনে ভুক্তভোগীরা জানান, তাঁরা তিনজন বাদী হয়ে প্রতারক রাকিব হাসান শুভ ওরফে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।

কোতোয়ালি থানায় করা সেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মাহাবুবুল করিম জানান, প্রাথমিক তদন্তে রাকিব হাসান শুভর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার দিনগত রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি এখন জেলে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ফরিদপুর ও রাজবাড়ীতে পাঁচটি মামলা হয়েছে। সেই পাঁচ মামলার একটির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধেও রাকিব হাসান শুভ রাজবাড়ী আদালতে মামলা করেছেন।

এসআই মাহাবুবুল বলেন, ‘রাকিব হাসান শুভ একজন প্রতিষ্ঠিত প্রতারক, অনেকের কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমনকি, চিকিৎসক না হয়েও জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্ডে নামের আগে ডা. ব্যবহার করেছেন।’

About Banglar Probaho

Check Also

আ.লীগ ও সহযোগীদের কাছে লোক চেয়েছে যুবলী

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আগামীকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় জমায়েতের উদ্যোগ নিয়েছে যুবলীগ। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি যখন …

Leave a Reply

Your email address will not be published.