‘বাংলাওয়াশ ত্রিদেশীয় সিরিজে’ একটি ম্যাচও জিততে পারল না বাংলাদেশ। আসরে নিজেদের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে টাইগাররা হেরেছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে।
ক্রাইস্টচার্চে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের ব্যাটিং নৈপুণ্যে বড় সংগ্রহের পথে এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষদিকে সোহান-ইয়াসিরদের ব্যর্থতায় টাইগারদের ইনিংস থামে ১৭৩ রানে। এরপর নিয়ন্ত্রণহীন বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে পাকিস্তানকে দমিয়ে রাখতে পারেননি তাসকিন, শরিফুল ও সাইফুদ্দিনরা।
রান তাড়া করতে নেমে ১৯.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। মোহাম্মদ রিজওয়ান ৬৯, বাবর ৫৫ ও মোহাম্মদ নেওয়াজ ৪৫ রান করেন। টাইগারদের হয়ে হাসান মাহমুদ ২৭ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন।
এক ওভার বল করে ৬ রান খরচায় রিজওয়ানের উইকেটটি তুলে নেন সৌম্য সরকার। ৩.৫ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে দলের সবচেয়ে খরুচে বোলার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। আসরে চার ম্যাচের সবকটিতে হেরে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে সাকিব বাহিনী।
এদিন বোলিংয়ে প্রথম ১০ ওভার পর্যন্ত কোনো প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেননি বাংলাদেশি বোলাররা। ১১তম ওভারে যখন প্রথম সুযোগ এসেছিল উইকেটের খাতা খোলার, সেটিও হাতছাড়া করেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। জীবন পেয়ে ক্যারিয়ারের ২২তম ফিফটি হাঁকিয়ে নেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
১১তম ওভারের চতুর্থ বলটি রিজওয়ানের পায়ের বাইরে ফুল লেংথে করেছিলেন শরিফুল। রিজওয়ান কবজির মোচড়ে খেললেও বলটা উঠে গিয়েছিল। সোজা গিয়ে জমা পড়ে শর্ট ফাইন লেগে দাঁড়ানো সাইফউদ্দিনের হাতে। কিন্তু হাতে রাখতে পারেননি তিনি।
এরপর অবশ্য কিছুটা আশার আলো নিয়ে হাজির হন হাসান মাহমুদ। টাইগারদের হয়ে উইকেটের খাতার খোলার পাশাপাশি পাকিস্তান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন তিনি। ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে হাসান মাহমুদকে কাভার দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে বদলি ফিল্ডার মোসাদ্দেক হোসেনকে ক্যাচ দেন বাবর। ৯ চারে ৪০ বলে ৫৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। বাবরকে ফেরানো এক বল পরই দুর্দান্ত ইয়র্কারে হায়দারের (০) স্ট্যাম্প তুলে ফেলেন হাসান।
দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে সাজঘরে ফেরেন রিজওয়ান। ৫৬ বল মোকাবিলায় ৪ বাউন্ডারিতে ৬৯ রান করেন এ পাক ওপেনার। শেষদিকে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের তুলোধুনো করে ২০ বলে ৫ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৪৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন নেওয়াজ।
এর আগে ক্রাইস্টচার্চে দুর্দান্ত শুরুর বদলে বাংলাদেশকে উল্টো চাপে ফেলেন ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। টানা ৮ ডটের পর নবম বলে তিনি প্রথম রানের দেখা পান। এরপর ১৫ বলে ১২ রান করে ফেরেন সাজঘরে। অন্যদিকে হাত খোলার আগেই নাসিম শাহের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। ৪ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ৪ রান।
ব্যর্থ ওপেনিংয়ের চাপ সামলে দলকে আলোর পথ দেখান লিটন দাস। তার সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে বড় জুটি গড়ে তোলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। চড়াও হতে থাকা লিটনকে যখন ইনিংসের ১৫তম ওভারে এসে মোহাম্মদ নেওয়াজ সাজঘরে ফেরান তখন তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৮৮ রান যোগ করে বাংলাদেশের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ১২৯ রানে। ৪২ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কার মারে ৬৯ রান করে মোহাম্মদ ওয়াসিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন।
বাকিটা পথ দলকে একাই টেনে নিয়ে যান সাকিব। ইনিংসের ১৯তম ওভারে যখন টাইগার অধিনায়ককে থামান নাসিম শাহ তখন থেমে যায় বাংলাদেশের রানের চাকাও। সাকিব ৪২ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কার মারে ৬৮ রান করেন। আসরে এটি তার টানা দ্বিতীয় ফিফটি। এর আগের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৭০ রানের ইনিংস।
সাকিবের বিদায়ের পর শেষ ৮ বলে আফিফ হোসেন, ইয়াসির আলী, নুরুল হাসান ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন মিলে মাত্র ৬ রান যোগ করেন। তাতে ১৮০-১৮৫ রানের প্রত্যাশিত স্কোর গিয়ে থামে ১৭৩ রানে।