বাংলার প্রবাহ রিপোর্ট: দু’ পক্ষের কেউই যুদ্ধ চায় না৷ অন্তত মুখে এমনই দাবি করছে ভারত এবং চীন৷ কিন্তু প্রায় পাঁচ মাস ধরে সংঘাতের পরিস্থিতি চলার পরেও সমাধান সূত্র বের হয়নি৷ফলে পুরোদস্তুর যুদ্ধ না বাঁধলেও লাদাখ সীমান্তে দুই দেশ ছোটখাটো যুদ্ধের দিকেই এগোচ্ছে বলে ক্রমেই আশঙ্কা বাড়ছে৷
বৃহস্পতিবারও মস্কোয় দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে যে বৈঠক হয়েছে, তাতে সে অর্থে কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি৷বৈঠকের সারমর্ম এটুকুই যে দুই দেশই আরও আলোচনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। গত কয়েক মাসের পরিপ্রেক্ষিতে যা নতুন কিছু নয়৷
বরং বৃহস্পতিবারের আলোচনার পরেও সীমান্তে বাস্তব পরিস্থিতির বিশেষ বদল ঘটেনি৷ উল্টে লাদাখে চীন আরও বেশি সংখ্যক সেনা মোতায়েন করছে বলে খবর৷
জানা গেছে, প্যাংগং লেকের উত্তর প্রান্তে ফিঙ্গার থ্রি এলাকা দখলের জন্য সেনা জমায়েত করতে শুরু করেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি৷
গত কয়েকদিনে ফিঙ্গার এলাকায় কৌশলগতভাবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পাহাড় চূড়া এবং উঁচু অংশের দখল নিয়ে নিয়েছে ভারতীয় সেনা৷ এবার একই চেষ্টা শুরু করেছে চীনা বাহিনী৷ ফলে যতই দু’ দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বৈঠক চলুক, বাস্তবে ফাঁকা পাহাড়ের চূড়া এবং কৌশলগতভাবে সুবিধেজনক উঁচু এলাকাগুলো দখলের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে দুই দেশের সেনা৷
আপাতত তাই লাদাখে পরিস্থিতি সরু সুতোর উপরে ঝুলছে৷ দুই দেশ মুখে দাবি করছে তারা যুদ্ধ চায় না৷ কিন্তু উত্তেজনা প্রশমনের জন্য প্রথম পদক্ষেপটিও নিতে চাইছে না কেউ৷
চীনের দিক থেকে বিচার করলে এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পক্ষে নরম মনোভাব দেখানোটাও অস্বস্তিকর৷ কারণ আগামী মাসেই চীনা কমিউনিস্ট পার্টির গুরুত্বপূর্ণ প্লেনাম শুরু হওয়ার কথা৷ সেখানে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপনের ঘোষণা করার কথা জিনপিংয়ের৷
মাও সে তুং-এর পর নিজেকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সেরা নক্ষত্র হিসেবে তুলে ধরতে মরিয়া জিনপিং৷ একই সঙ্গে দলের শতবর্ষে দেশবাসীর সামনে নিজেকে এবং চীনকে প্রবল ক্ষমতাবান প্রমাণ করার দায়ও রয়েছে তার৷ এই সময় ভারতের দাবি মেনে সেনা পিছিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেওয়া চীনের প্রেসিডেন্টের পক্ষে যথেষ্টই অস্বস্তির৷
বাংলার প্রবাহ/সুমন