ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানের বিভাগীয় কার্যালয়ে তল্লাশি, ব্যক্তিগত নথি নিয়ে যাওয়া ও তার স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশের মাধ্যমে খোঁজখবর নেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে ১০টি ছাত্রসংগঠন। তাকে এমন হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ‘প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনসমূহে’র অন্তর্ভূক্ত নয়টি বামপন্থী সংগঠন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদ।
এর আগে, গত সোমবার তানজীমউদ্দিন উদ্দীনসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক নামের একটি সংগঠনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অবসান ও দায়িত্ব পালনে ‘ব্যর্থতা’র অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রাব্বানীর পদত্যাগ দাবি করেন তারা। স্মারকলিপি দেওয়ার পর তাঁর বিভাগীয় কার্যালয়ে তল্লাশি, ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে যাওয়া ও স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশ দিয়ে খোঁজ নেওয়ার ঘটনা ঘটে। এর পেছনে প্রক্টরের প্রচ্ছন্ন সংশ্লিষ্টতা’র অভিযোগ আনেন অধ্যাপক তানজীমউদ্দীন। এ ব্যাপারে বুধবার দুপুরে লিখিতভাবে উপাচার্যকে জানিয়েছেন তিনি।তবে, অভিযোগের ব্যাপারে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী গণমাধ্যমকে বলেন, তানজীমউদ্দিন যা দাবি করছেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত অতিরঞ্জন। তিনি ঘটনাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে মিথ্যাচার করছেন। অধ্যাপক তানজীমউদ্দীনের কথাকে বাকসন্ত্রাস বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তানজীমউদ্দিনকে হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বামপন্থী ৯টি ছাত্রসংগঠনের নেতারা তাঁদের বিবৃতিতে বলেন, ভিন্নমতের একজন শিক্ষকের প্রতি এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে প্রক্টরের আচরণ তাঁদের ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন করে। একজন শিক্ষক হয়ে আরেকজন শিক্ষকের প্রতি উদ্ভট ক্ষমতার চর্চা দেখে তাঁরা ভীষণভাবে লজ্জিত। তাঁরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার বিচার দাবি করেন। বিচার না হলে ঘটনার দায় উপাচার্যও এড়াতে পারবেন না।
ছাত্র অধিকার পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, একজন শিক্ষকের সঙ্গে এমন আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। তারা মনে করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের বাহিনী হিসেবে কাজ করছে। শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দেশের মানুষের গণতন্ত্র-অধিকার রক্ষায় দলমত–নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য তারা শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ‘প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনসমূহ’ অন্তর্ভুক্ত সংগঠনগুলো হলো, ছাত্র ইউনিয়ন (নজির-রাগীব), সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (বাসদ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী), ছাত্র ফেডারেশন (গণসংহতি আন্দোলন), ছাত্র ফেডারেশন (জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল), বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন।