২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পাশাপাশি ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের প্রাথমিক লক্ষ্য নিয়ে ৬টি ইকোনমিক জোনের ১৪টি শিল্পকারখানা যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। দেশি-বিদেশি এসব শিল্পকারখানা চলতি মাসেই পুরোদমে উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। আগামী ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক কার্যক্রমসহ ৫০টি শিল্প অবকাঠামোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
একসময়ের গলাসমান সাগরের পানিতে ডুবে থাকা জলাভূমিতে একের পর এক শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে। কিছু কারখানা পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর পর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ৩০ হাজার একর জায়গার ওপর স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের পুরোটাই সাগরের মাটি দিয়ে গড়ে উঠেছে।
আগামী ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মীরসরাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের ৪টি কারখানার পাশাপাশি সিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ২টি, মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৭টি এবং শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি শিল্পকারখানার বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। সে সঙ্গে আরও ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২৯টি কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এখানে অন্তত ৩৯ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
এ ছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের সড়ক, ভবন এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ ৬টি গুরুত্বপর্ণ অবকাঠামোর উদ্বোধন হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, এ উদ্বোধনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী একটি কর্মচাঞ্চল্যপূর্ণ শিল্পনগরীতে পরিণত হবে।
বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থানের জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলে। বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর অপেক্ষায় থাকা ১৪টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এতে প্রায় চার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ যত বেশি ইকোনমিক জোন হবে, দেশে তত বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়বে। ততই দেশে শিল্পপ্রতিষ্ঠান হবে। একই সঙ্গে মানুষের কর্মসংস্থানও বাড়বে।
এদিকে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়া শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি বিশ্বখ্যাত জাপানি প্রতিষ্ঠান ম্যাকডোনাল্ড এবং নিপ্পন স্টিলও রয়েছে। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে ৩ হাজার একর জায়গার ওপর একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল, আমার মতে আর কোথাও নেই। কাজেই এ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে এ অর্থনৈতিক অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
লক্ষ্য অনুযায়ী, ২০৪১ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল পুরোদমে উৎপাদনে যাবে। এর মধ্যে টেকনাফের সাবারংয়ের মতো পর্যটননির্ভর অর্থনৈতিক অঞ্চলও রয়েছে। এতে কর্মসংস্থান হবে অন্তত কোটি মানুষের।