আমন মৌসুম শুরুর আগেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ধান-চালের মোকাম চাঙা হয়ে উঠেছে। তবে ধানের দাম মণপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেশি। অন্যদিকে ধানের দাম বাড়ায় চাল উৎপাদনে মণপ্রতি ১০০ টাকা লোকসান হচ্ছে বলে দাবি করছেন মিল মালিকরা। এদিকে কৃষি এবং খাদ্য বিভাগ বলছে, নতুন ধান উঠলে বাজার স্থিতিশীল হবে।
সামনে আমন ধান তোলার মৌসুম। এই ফাঁকা সময়ে আশুগঞ্জ বাজারে ধানের সরবরাহ কমায় দাম ঊর্ধ্বমুখী। ফলে খুশি বাজারে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষকসহ মৌসুমি বেপারিরা।
হাওড়াঞ্চল থেকে বাজারে আসা কয়েকজন কৃষক এবং ধান বিক্রেতা বলেন, ধানের দাম এমন থাকলে কৃষকরা কিছুটা লাভ করতে পারবেন। বাজার দরে আমরা খুশি। বাজার চড়া থাকায় আমাদের সুবিধা হয়েছে।
অন্যদিকে বাজারে ধানের দাম বাড়ায় চাল উৎপাদনে মণপ্রতি ১০০ টাকা লোকসান হচ্ছে বলে দাবি মিল মালিকদের। তারা বলেন, ধানের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকা হলে, চালের দাম যদি ২ হাজার ৭০০ টাকা হতো, তাহলে আমাদের মুনাফা হতো। তবে চালের দাম তো ২ হাজার ৫৬০ টাকা। আমরা যদি মণপ্রতি ১ হাজার ২৬০ টাকায় ধান কিনতে পারতাম, তাহলে আমাদের ধান-চালের সমন্বয় হতো।
ধানচাল বাজার কমিটি বলছে, আগাম বন্যায় গত মৌসুমে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় বাজারে ধানের সংকট রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ধানচাল বাজার কমিটির সভাপতি হাজি জহিরুল ইসলাম জারু বলেন, এ বছর বন্যার কারণে ধানের অনেক ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ধানের সংকট দেখা দিয়েছে।
ধানের সরবরাহ কম থাকায় বাজারে চাঙা ভাব জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কাউছার সজিব বলেন, এখন তো ধানের মৌসুম নয়। সামনে আমন মৌসুম শুরু হবে। বর্তমানে আগের তুলনায় ধানের সরবরাহ কম, সে জন্য ধানের দাম একটু বেশি।
আমন ধান বাজারে এলে ধানের দাম স্থিতিশীল হবে জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা বাজারমূল্য না জেনেই তাদের উৎপাদিত ধান দালাল-ফড়িয়াদের কাছে কম মূল্যে বিক্রি করে দেন। তারা যদি কৃষি বিভাগের সঙ্গে সহযোগিতা করে ধান-চাল বিক্রি করেন, তাহলে তারা লাভবান হবেন।
ধানচাল বাজার কমিটির দাবি, আশুগঞ্জ হাটে প্রতিদিন গড়ে এক লাখ মণ ধান বেচাকেনা হয়। আর ধান কেনেন জেলার তিন শতাধিক চালকল মালিক।