ইরানের ইউরেনিয়াম ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণার পর সব পক্ষকে শান্ত থাকতে আহ্বান জানিয়েছে চীন। এ ঘোষণার পর ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা বেড়েছে।
রয়টার্সের আজ মঙ্গলবারের খবরে জানা যায়, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেছেন, ইরানের পরমাণু কার্যক্রম জটিল ও সংবেদনশীল। বেইজিংয়ে একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হুয়া বলেন, ইরানের পরমাণু কার্যক্রম ইস্যুতে সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে চীন। উত্তেজনা বাড়াতে পারে, এমন কোনো আচরণ না করে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে পরিস্থিতির পরিবর্তন চায় চীন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া আরও বলেন, শর্তহীনভাবে চুক্তিতে ফিরে আসতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। ইরানের ওপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
ইরান বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে তারা চুক্তি মেনে চলবে। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইরান যদি কঠোরভাবে মেনে চলে, তবে যুক্তরাষ্ট্র আবার চুক্তিতে ফিরবে।
২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক চুক্তির আগপর্যন্ত ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার এই স্তরেই পৌঁছেছিল, এখান তারা সে জায়গায় যেতে চায়। ২০১৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এরপর ইরানও পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানায়। গত মাসে দেশটির শীর্ষ পরমাণুবিজ্ঞানীকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির পার্লামেন্ট পারমাণবিক কর্মসূচি জোরদারের লক্ষ্যে আইন পাস করে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্র। ছয় জাতি চুক্তি হিসেবে পরিচিত এ চুক্তিতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া রয়েছে রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি। ওই চুক্তির মূল বিষয় ছিল, ইরান পরমাণু কার্যক্রম সীমিত রাখবে এবং আইএইএ ইরানের যেকোনো পারমাণবিক স্থাপনায় যেকোনো সময় পরিদর্শন করতে পারবে। বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর গত বছর এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে ইরান আবার তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চালুর ঘোষণা দেয়।