রাজধানীর গুলশান এলাকায় ফুটপাতের জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা প্রায় ২৫০টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছে গুলশান সোসাইটি কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার গুলশান-২ নম্বর এলাকার ১৫টি সড়কের ফুটপাত থেকে এসব দোকান উচ্ছেদ করা হয়।
উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের দেরি দেখে তাঁরা নিজেরাই উচ্ছেদ শুরু করেছেন বলে গুলশান সোসাইটির কর্মকর্তারা জানান।
বেলা ১১টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়। এ সময় গুলশান-২ নম্বরের নাভানা ও রবি টাওয়ারের আশপাশের ১০টি ও গুলশানের লেকপাড়ের ৫টি রাস্তায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ১, ৩, ১৭ থেকে ২৪, ১১৩, ১১৪, ১২৬, ১৩০ এবং ১৩৩ নম্বর সড়কের ফুটপাত দখল করে বসানো দোকান ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চলা অভিযানে গুলশান সোসাইটির প্রতিনিধি, সোসাইটির শতাধিক নিরাপত্তাকর্মী ও গুলশান থানা-পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অবৈধ স্থাপনাগুলোর মধ্যে খাবার হোটেল, গাড়ি মেরামতের গ্যারেজ ও চায়ের টংঘর ছিল। ফুটপাত দখল করে একটি খাবার হোটেলের মালপত্র রাখার গুদাম ঘরও বানানো হয়েছিল। উচ্ছেদ করা স্থাপনাগুলো ট্রাকে করে সিটি করপোরেশনের আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে (স্থায়ী বর্জ্য অপসারণ কেন্দ্র) পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সোসাইটির প্রতিনিধিরা বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষ গুলশান এলাকার ফুটপাতগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য ফুটপাতের অবস্থা দেখতে গত ১৩ আগস্ট গুলশান সোসাইটির প্রতিনিধিসহ ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান প্রকৌশলীসহ অন্য কর্মকর্তারা গুলশানের বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত পরিদর্শন করেন। তখন দেখা যায়, অধিকাংশ সড়কের ফুটপাত দখল হয়ে গেছে। পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই। অনেক জায়গায় পথচারীদের রাস্তায় নেমে চলতে হচ্ছে।
গুলশান সোসাইটির মহাসচিব শুক্লা সারওয়াত সিরাজ প্রথম আলোকে বলেন, গাড়ির ওপর চাপ কমাতে হলে হাঁটতে হবে। হাঁটার সুযোগ করতে হলে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে। না হলে মানুষ হাঁটবে কোথায়? ফুটপাতে তো জায়গা নেই। তাই ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এই অভিযান চলবে।
শুক্লা সারওয়াত আরও বলেন, ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তারা বলেছিলেন, যৌথভাবে সিটি করপোরেশন ও গুলশান সোসাইটি মিলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। উচ্ছেদের বিষয়ে সোসাইটির মনোভাব মেয়রকে জানানো হয়েছিল। করপোরেশন উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু এর মধ্যে অনেক দিন চলে গেছে। এ কারণে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে এই অভিযান চালানো হয়েছে।
সোসাইটির নেতারা বলছেন, গুলশানের ১৫০টি সড়কে বাইরের প্রচুর মানুষ যাতায়াত করেন। তাঁদের একটি চাহিদা থাকে। এই সুযোগে ফুটপাত দখল করে অনেকে স্থাপনা করে দোকান শুরু করেন। ওই সব দোকানে খাবারের বাইরেও নিষিদ্ধ দ্রব্যও বিক্রি হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। উচ্ছেদের এটিও একটি কারণ।
অভিযানের বিষয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বি এম ফরমান আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবার যাতে দখল না হয়, সে জন্য বিট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দখলমুক্ত জায়গা ভবিষ্যতে আর দখল হবে না। ফুটপাতের অবৈধ দোকান উচ্ছেদে অভিযান চলবে।’