বাংলার প্রবাহ রিপোর্ট: ইলিশের জন্য হাপিত্যেশ করে বসে থাকার দিন বোধহয় এবার শেষ হতে চলেছে। সমুদ্রের ট্রলার কখন ইলিশ বয়ে নিয়ে ফিরবে তার দিন গোনার আর দরকার নেই। এবার এ রাজ্যের গ্রামের পুকুরেই হবে ইলিশের চাষ। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে সেই ইলিশ চাষ শুরুও হয়ে গেল। এই ইলিশের নাম পেংবা বা মনিপুরী ইলিশ। স্বাদে গন্ধে একদম এক রকম। ব্যাপকভাবে চাষ হলে দাম যে অনেকটাই নেমে আসবে তা তো আশা করাই যায়। তাই দুরুদুরু বুকে ইলিশের ডালার কাছাকাছি গিয়েও দাম শুনে ছিটকে বেরিয়ে আসার দিন এবার বোধহয় শেষ হতে চলেছে।
মূলত ইলিশের অভাব ঘোচাতেই এবার কৃষি তথ্য ও উপদেষ্টা কেন্দ্র এবং কৃষি দফতরের উদ্যোগে আতমা প্রকল্পে পেংবা অর্থাৎ মণিপুরী ইলিশ মাছ চাষ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এই প্রকল্পে ভাতারে মৎস্যজীবীদের মাছের চারা ও অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করা হযল। ভাতার ব্লকের মোট আঠারো জন উপভোক্তাকে এই মনিপুরী ইলিশের চারা দেওয়া হয়। বর্ধমান এক নং ব্লকেও কুড়ি জন মৎস্যজীবীকে এই মাছের চারা দেওয়া হয়েছে।
কৃষি দফতরের আধিকারিকরা জানালেন, এই মনিপুরী ইলিশ দেখতে দেশি পুঁটি মাছের মতো। তবে পুঁটির থেকে আকারে তা ঢের বড়। স্বাদ একেবারে ইলিশের মতো। ইতিমধ্যে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট, ভাতার, মেমারি দুই সহ কয়েকটি ব্লকে মৎস্য দপ্তরের সহযোগিতায় মণিপুরী ইলিশ বা পেংবা মাছের চাষ শুরু হয়েছে। ইলিশের জায়গায় পেংবা সকলের মন জয় করে নিতে পারবে বলে আশাবাদী মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, অন্য মাছ বড় করতে অনেক খাবার দিতে হয়। তাতে খরচও বেশি হয়। কিন্তু এই চাষে খাবারের দরকার নেই। উদ্ভিদ কনা খেয়েই এই মাছ বড় হয়।
গবেষণার জন্য ওড়িশা থেকে পেংবা মাছের চারাপোনা আনা হয়েছিল। এখন এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই মাছের চারা পাওয়া যাচ্ছে। ভালো লাভের আশায় অনেক মৎসজীবী পেংবা চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। এক বছরের মধ্যেই এই মাছের ওজন চারশো গ্রামের কাছাকাছি পৌঁছে যায়।
বাংলার প্রবাহ/সুমন