জেলেদের চাল সহায়তায় সরাসরি তিনটি মন্ত্রণালয় এবং চারটি সরকারি দফতর সম্পৃক্ত। পাশাপাশি রয়েছে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের হাতও। এভাবে ঘুরে ঘুরে জেলেদের ভাগ্যে ঠিকমতো জুটছে না নিষেধাজ্ঞার সময় খাদ্য সহায়তা। আবার প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারের ঘনিষ্ঠরাই লুটে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ জেলেদের।
শুধু তাই নয় গত ১০ বছরে লাখ লাখ জেলের চাল বাইরে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগও উঠেছে।
জানা গেছে, একদিকে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে দেশের ছয়টি অভয়াশ্রমে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে উপকূলরক্ষী কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ এবং মৎস্য অধিদফতর। অন্যদিকে নিজেদের ভাগ্যের ছিঁড়ে যাওয়া জাল মেরামত করে অলস সময় পার করতে বাধ্য হচ্ছেন জেলেরা।
বছরের অর্ধেকটা সময় নদী কিংবা সাগরে মাছ ধরার পরিবর্তে উপকূলে বেকার জীবন কাটাতে হয় তাদের। অথচ মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময়ে সরকারের চাল বরাদ্দ জোটে না জেলেদের ভাগ্যে। অথচ চলতি ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় নিবন্ধিত প্রতিটি জেলের জন্য মাথাপিছু ২৫ কেজি করে চাল সহায়তা দিয়েছে সরকার।
জেলেদের অভিযোগ, এক থেকে তিন হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে তারা জেলে হিসেবে নিবন্ধিত হন। এরপর আরও দুই হাজার টাকার বিনিময়ে দেয়া হয় বিশেষ সহায়তার কার্ড। কিন্তু বৈধকার্ড থাকার পরও তাদের দেয়া হয় না চাল। জেলেদের সহায়তার সেই চাল চেয়ারম্যান-মেম্বাররা ঘনিষ্ঠদের মধ্যে বণ্টন করছেন,পাশাপাশি বাইরে বিক্রি করে দেন বলেও জেলেদের অভিযোগ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলেদের চাল সহায়তার ক্ষেত্রে সরাসরি তিনটি মন্ত্রণালয় এবং চারটি সরকারি দফতর সম্পৃক্ত রয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে সহায়তার কাগজ পাঠানো হয় ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে নথি আসে মৎস্য মন্ত্রণালয়ে। পরবর্তীতে চাল চলে যায় জেলা প্রশাসনে। পর্যায়ক্রমে পাঠানো হয় উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে। আর নগরীতে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরের মাধ্যমে চাল বণ্টনের নিয়ম।
চট্টগ্রাম মৎস্য অধিদফতরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, পুরোটাই জনপ্রতিনিধিদের কাজ। এখানে দীর্ঘ সময়ের কোনো সুযোগ নেই। বন্ধের সময়ই জেলেরা চাল পাবের।
বোট মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী জেলেরা বরাদ্দ পাবেন।
সাগর ও নদীতে মাছ ধরার জন্য সরকারের নিবন্ধিত ৪২ হাজার বড় ট্রলার এবং ২৫ হাজার মাঝারি সাইজের নৌকায় নিয়োজিত রয়েছেন ১০ লাখের বেশি জেলে।