বাংলার প্রবাহ রিপোর্ট: করোনাভাইরাসের আবহেই মুক্তি পাওয়া ৬৮০ জন বাংলাদেশি বন্দীকে নিজেদের দেশে ফেরাতে উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের কারা দফতর। রাজ্যটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দি এই বাংলাদেশি নাগরিকরা ইতিমধ্যেই তাদের সাজার মেয়াদ শেষ করেছেন। কিন্তু করোনা ও লকডাউনের কারণে তাদের আর ঘরে ফেরা হয়ে ওঠেনি। এর কারণ একদিকে যেমন রাজ্যে গণপরিবহন ব্যবস্থা স্তব্ধ তেমনি আন্তর্জাতিক সীমান্তও বন্ধ রয়েছে। যদিও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। এমন এক পরিস্থিতিতে মুক্তিপ্রাপ্ত ওই বাংলাদেশি বন্দিদের নিজেদের দেশে ফেরাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের কারা দফতর।
কারা দফতর সূত্রে খবর, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের কারাগারগুলিতেই বাংলাদেশি বন্দিদের সংখ্যাটা বেশি। প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি বন্দি রয়েছেন এই কারাগারগুলিতে। এর ওপর রয়েছে স্থানীয় বন্দীরা। কিন্তু ‘কোভিড-১৯’ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলাটা অত্যন্ত জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে সেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেক্ষেত্রে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশি বন্দিদের দেশে ফেরত পাঠালে ওই কারাগারগুলিতে বন্দীর সংখ্যাটা কমে যাবে ও দূরত্ব বিধি মেনে চলাটাও সম্ভবপর হবে। এই বিষয়টি বিবেচনা করেই রাজ্যের কারা দফতর ওই বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়েছে।
কারণ কারাগারে বন্দি বিদেশি নাগরিকদের দেখাশোনার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের কারা দফতরের হাতে থাকলেও সাজার মেয়াদ শেষে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করা বাধ্যতামূলক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, বাংলাদেশি বন্দিদের দেশে ফেরত পাঠালে পশ্চিমবঙ্গের কারাগারগুলিতে চাপ কমবে। করোনার কারণে গত কয়েক মাসে তিন জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। ফলে আমরা কারাগারগুলিতে এই বন্দীদের ভিড় কমাতে চাইছি।
গত মার্চ মাস থেকে বিশ্বজুড়ে শুরু হয় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। সেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে আদালতের নির্দেশে রাজ্যের কারা দফতর কয়েক হাজার বন্দিদের প্যারোলে মুক্তি দেয়।
পশ্চিমবঙ্গে মোট কারাগারের সংখ্যা ৬০টি। সব মিলিয়ে বন্দীর সংখ্যা কমপক্ষে ২৫ হাজার। এর মধ্যে প্রায় ৭ হাজার বন্দী দোষী সাব্যস্ত। বাকীরা বিচারাধীন বন্দী।
বাংলার প্রবাহ/এস এম হক