জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার অপরাধে মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড র্যান্ড্রিয়ামান্দ্রাতোকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে গণভোটের মাধ্যমে রুশ ভূখণ্ডে যুক্ত করার নিন্দা জানিয়ে গত সপ্তাহে জাতিসংঘে ভোট দিয়েছিলেন তিনি। মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে বুধবার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে নিজ ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার বিষয়ে রাশিয়ার প্রচেষ্টার নিন্দা জানায় জাতিসংঘ। মূলত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ভোটাভুটির মাধ্যমে এই নিন্দা জানায়।
গত সপ্তাহের ভোটে জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশের মধ্যে এই নিন্দা প্রস্তাবে সমর্থন দেয় ১৪৩টি দেশ, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানার মধ্যে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, ঐক্য ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকেও পুনর্নিশ্চিত করেছে বলে মনে করা হয়।
তবে চীন ও ভারতসহ ৩৫টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল। অন্যদিকে রাশিয়ার পাশাপাশি, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া এবং নিকারাগুয়া এই চারটি দেশ ভোট প্রত্যাখ্যান করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়েলিনার কার্যালয়ের দুই সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, রাশিয়াকে নিন্দা জানানোর প্রস্তাব সমর্থনে যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের একজন হওয়ার কারণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড র্যান্ড্রিয়ামান্দ্রাতোকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ আফ্রিকার অনেক দেশকে বিব্রতকর কূটনৈতিক অবস্থানে ফেলেছে। অনেকেরই পশ্চিম এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কের পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্কের জটিল ইতিহাস রয়েছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর কিছু পশ্চিমা দেশকে হতাশ করে আফ্রিকার এসব দেশ মূলত যুদ্ধে কোনো পক্ষ নেয়া এড়িয়ে গেছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত ইউক্রেনের সংকট নিয়ে রেজুলেশনের বিভিন্ন ভোটের সময় ভোট দেয়া থেকে বরাবর বিরত ছিল আফ্রিকার প্রাচীন এই দ্বীপ রাষ্ট্র মাদাগাস্কার। দেশটির সরকার এসব বিষয়ে নিরপেক্ষতা ও জোটনিরপেক্ষতার কথা বলেছে।
রয়টার্স বলছে, বরখাস্ত হওয়ার পর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি রিচার্ড র্যান্ড্রিয়ামান্দ্রাতো।