দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য বিস্তারের খেলা রুখতেই ভারতীয় নৌবাহিনীতে যোগ হতে চলেছে এই ৬টি সাবমেরিন।
দাদাগিরি আর বরদাস্ত নয়। চীনকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে এবার ৬টি অত্যাধুনিক সাবমেরিন কেনার প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে ভারত। আগামী মাসের মধ্যে নিলামের সব কাজ শেষ করতে চাইছে মোদি সরকার। জানা গেছে, এজন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা।
রবিবার এক সরকারি সূত্র জানায়, পার্টনারশিপ মডেলে ভারতেই তৈরি হবে এই সাবমেরিনগুলো। আমদানির পরিমাণ কমিয়ে দেশকে স্বনির্ভর হওয়ার ডাক দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই পথে হেঁটেই দেশে তৈরি অত্যাধুনিক সাবমেরিন কিনবে ভারত। এজন্য ইচ্ছুক সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও নৌবাহিনী যৌথ উদ্যোগে নিলামের ব্যবস্থা করেছে। এই মেগা প্রজেক্টের নাম দেওয়া হয়েছে পি-৭৫। রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল বা আরএফপি অক্টোবর মাসের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এজন্য দুটি নৌবন্দর ও পাঁচটি বিদেশি সংস্থার নাম খসড়া তালিকায় রাখা হয়েছে। মেইক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পে এই প্রজেক্ট বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
ভারতীয় নৌবাহিনী মোট ২৪টি নতুন সাবমেরিন কেনার কথা ভাবছে। এর মধ্যে ৬টি নিউক্লিয়ার অ্যাটাক সাবমেরিন। ভারতীয় নৌবাহিনীতে এখন আপাতত ১৫টি সাধারণ ও ২টি নিউক্লিয়ার অ্যাটাক সাবমেরিন রয়েছে। গ্লোবাল নাভাল অ্যানালিস্ট জানাচ্ছে, চীনা নৌবাহিনীতে রয়েছে ৫০টিরও বেশি সাবমেরিন। যুদ্ধ জাহাজ রয়েছে প্রায় ৩৫০টি। আগামী ৮-১০ বছরে এই সংখ্যাটা চীন ৫শ’তে নিয়ে যেতে চাইছে।
এদিকে, ভারতীয় নৌসেনা পৌঁছে গিয়েছে দক্ষিন চীন সাগরে। ২০০৯ সাল থেকে এই দক্ষিণ চীন সাগরে দ্রুত প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে চীন। দুনিয়ার সবচেয়ে ব্যস্ত এই সমুদ্রপথে চীনের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে স্বয়ং আমেরিকাও। ইতিমধ্যেই এই অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে বেইজিং। পাশাপাশি রয়েছে অনেক মিলিটারি সরঞ্জামও।
জানা যাচ্ছে, গত ১৫ জুন গালওয়ানে ২০ ভারতীয় সেনা হওয়ার পর দক্ষিণ চীন সাগরে একটি শক্তিশালী রণতরী মোতায়েন করেছে ভারত। ওই অঞ্চলে ভারতসহ অন্যান্য দেশের উপস্থিতি নিয়ে বরাবরই আপত্তি করে আসছে চীন। ভারত-চীন বৈঠকেও এই বিষয়ে আভিযোগ জানিয়েছে চীন। তাই শত্রুপক্ষকে মুখের ওপর জবাব দিয়েই যুদ্ধ জাহাজ পাঠিয়েছে ভারত।
এই দক্ষিণ চীন সাগরে ইতিমধ্যেই রণতরী মোতায়েন করেছে আমেরিকা। এবার ভারত সেই তালিকায় যুক্ত হওয়ায় চাপে পড়ে গেল চীন। গোটা বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গেই করেছে ভারত। সেখানে প্রতিনিয়ত মার্কিন নেভির সঙ্গে যোগাযোগও রাখছে ভারতীয় নৌবাহিনী।