Sunday , December 22 2024
Breaking News

হাজারো প্রদীপের আলোয় আলোকিত বরিশাল মহাশ্মশান

“আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য-সুন্দর” এমন বাণীই ধারণ করে কালি পূজার আগের রাতে মঙ্গলের খোঁজে শত শত আলোর প্রজ্বালন ঘটেছে বরিশাল মহাশ্মশানে। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও ১৭২ বছরের পুরনো মহাশ্মশানে দীপাবলি উৎসবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের মৃত স্বজনদের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। পূজা, যোগ, ভোগ আর বন্দনায় অন্ধকার বিরানভূমি পরিণত হয়ে উঠেছে পুণ্যভূমিতে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জানান, দীপাবলির এ আলো অন্তরের অন্ধকার দূর করার আলো। এ আলো মঙ্গলের আলো। কালি পূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে পূজা অর্চনা করলে প্রয়াত ব্যক্তির আত্মা শান্তি লাভ করে। তাই আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি প্রয়াত প্রিয়জনের উদ্দেশে তার সমাধিস্থলে নিবেদন করা হয় প্রয়াতের পছন্দের নানা ধরনের খাবার। সবকিছু করা হয় তিথি থাকা অবস্থায়। এ ছাড়া সমাধির পাশে মোমবাতি প্রজ্বালন করে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন স্বজনরা।

দীপা সাহা নামে একজন বলেন, আমি আজ এখানে মোমবাতি জ্বালিয়েছি। কারণ আমি বিশ্বাস করি এ আলো অন্ধকার কাটিয়ে সত্য ও পবিত্র আলো জ্বালাবে।

শুব্রত দাস বলেন, পবিত্র আত্মাগুলো এ আলোর মধ্য দিয়ে বারবার আমাদের মাঝে ফিলে আসবে। আর দুষ্ট আত্মাগুলো হারিয়ে যাবে।

বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জি জানান, ৫ একর ৯৬ শতাংশ মহাশ্মশানের অধিকাংশ সমাধি ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে এখনও সেখানে ব্রাহ্মণদের ২ থেকে ৩টি এবং রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাসের বাবা সত্যানন্দ দাস ও পিতামহ সর্বানন্দা দাস, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, মনোরমা মাসি মা, শিক্ষাবিদ কালিচন্দ্র ঘোষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির সমাধি রয়েছে।

তিনি আরও জানান, নতুন পুরনো মিলিয়ে মহাশ্মশানে ৬১ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। এরমধ্যে ৫০ হাজারের অধিক পাকা, ১০ হাজার কাঁচা মঠ রয়েছে। এছাড়া ৮০০ মঠ রয়েছে যাদের স্বজনরা এই দেশে নেই। সেসব মঠ হলুদ রং করা হয়েছে। স্বজন না থাকা মঠগুলোতে কমিটির পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়ে থাকে।

মানিক মুখার্জি আরও জানান, ভারত, নেপালসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের স্বজনদের জন্য এ দিনে আসেন বরিশাল মহাশ্মশানে।

এদিকে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ দীপাবলি উৎসবকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন।

কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আর মুকুল বলেন, মহাশ্মশানে নিরাপত্তা নিশ্চিতে এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মহানগর পুলিশ, র‍্যাবসহ সাদা-পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করেছে। পাশাপাশি আছেন মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির ১০০ স্বেচ্ছাসেবক।

১৯২৭ সাল থেকে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় শ্মশান দীপাবলি উৎসব পালিত হয়ে আসছে বরিশাল মহাশ্মশানে।

About Banglar Probaho

Check Also

আ.লীগ ও সহযোগীদের কাছে লোক চেয়েছে যুবলী

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আগামীকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় জমায়েতের উদ্যোগ নিয়েছে যুবলীগ। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি যখন …

Leave a Reply

Your email address will not be published.