প্রায় একমাস ধরে মা রহিমা বেগমের (৫৫) সন্ধান করছিলেন মরিয়ম মান্নানসহ তিন মেয়ে। ১২ দিন আগে (গত শুক্রবার) ময়মনসিংহে উদ্ধার হয় এক নারীর মরদেহ। সেই মরদেহকে নিজের মায়ের বলে দাবি করেছিলেন তারা।
তবে এবার জানা গেল, নিখোঁজ হওয়া মা রহিমা খাতুনকে জীবিত পাওয়া গেছে। ফরিদপুর থেকে তাকে জীবিত উদ্ধার করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মেয়ে মরিয়ম মান্নান শনিবার রাতে ফেসবুকে এক পোস্টে বিষয়টি জানান। তিনি লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, এখন আমার থেকে খুশি আর কেউ নেই। খুলনার মহেশ্বরপাশায় নিখোঁজ আমার মাকে অক্ষত অবস্থায় ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার এসআই লুৎফুল হায়দার। কেএমপি (খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ) পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি আমাকে নিশ্চিত করেছেন।’
গণমাধ্যমকেও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (নর্থ) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আজ রবিবার সকালে মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং করা হবে।’
ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার আব্দুল হক জানান, শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঁইয়া জানান, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দৌলতপুর জোনের এডিসির নেতৃত্বে দৌলতপুর থানা পুলিশ রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে। তাকে নিয়ে পুলিশের টিমটি খুলনায় রওয়ানা দিয়েছে। খুলনায় আনার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে তিনি আসলে অপহৃত হয়েছিলেন নাকি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন।’
উল্লেখ্য, খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। সেসময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা। দীর্ঘসময় পরও তার খোঁজ না পাওয়ায় ঘটনার দিন রাত সোয়া ২টায় দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা করেন তার মেয়ে আদুরী।
এরপর পুলিশ ও র্যাব ছয়জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআই’কে তদন্তভার দেওয়া হয়।
এদিকে, গত শুক্রবার দুপুরে রহিমা বেগমের মেয়েরা ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত মহিলার লাশকে ‘নিজেদের মায়ের লাশ’ দাবি করলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। উদ্ধার হওয়া লাশের পরনের কাপড় দেখে প্রাথমিকভাবে নিজের মায়ের লাশ বলে জানায় রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান। তবে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন উদ্ধার হওয়া নারীর লাশ অর্ধগলিত ছিল দাবি করে লাশের ডিএনএ টেস্ট করার প্রক্রিয়া শুরু করেন।