ইরানে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুতে জনগণের আবেগকে সম্মান জানালেও, এ ঘটনার প্রতিবাদে কোনও ধরনের সহিংসতা-নৈরাজ্য গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। দুই সপ্তাহের সহিংস বিক্ষোভে অন্তত ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান হিউম্যান রাইটস-আইএইচআর। এদিকে, মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদে এখনও দেশে দেশে অব্যাহত রয়েছে বিক্ষোভ। খবর আল আরাবিয়া।
ইরানে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রায় দুই সপ্তাহ পর প্রথমবারের মতো দেশটির গণমাধ্যমে সাক্ষাতকার দেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি। ওই সাক্ষাতকারে মাহসার মৃত্যুতে জনগণের আবেগকে সম্মান জানিয়ে, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাসও দেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট রাইসি বলেন, একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে বলছি, মাহসার মৃত্যুর ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। ঘটনার প্রকৃত কারণ পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা হবে বলে তার পরিবারকে আশ্বস্ত করেছি। খুব শিগগিরই মাহসার ফরেনসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
এসময় মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদে যে বা যারা বিক্ষোভে অংশ নেবে তাদের কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন রাইসি।
তিনি আরও বলেন, বিক্ষোভকারীরা দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে। এগুলো কোনওভাবেই মেনে নেয়া হবে না।
এর আগে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে সাক্ষাৎকার দেয়ার কথা থাকলেও, নারী উপস্থাপক হিজাব পড়তে অস্বীকৃতি জানানোয় তা বাতিল করে আলোচনায় এসেছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে এখনও দেশে দেশে অব্যাহত রয়েছে বিক্ষোভ। চুল কেটে আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন ইরানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নাজানিন জাঘারি। রাইসির বক্তব্যের সমালোচনা করে বিক্ষোভ হয় তুরস্কেও।
নরওয়ের রাজধানী অসলোতে ইরানের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করলে অন্তত ১০০ জনকে আটক করে নিরাপত্তাবাহিনী। মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় চলমান বিক্ষোভের জেরে ইরানের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আরোপে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সতর্ক করেছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক।
ইরানে দুই সপ্তাহের আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস-আইএইচআর। আটক করা হয়েছে শত শত বিক্ষোভকারীকে।