লোকসান কাটছেই না তাঁত মালিকদের
দফায় দফায় তাঁতশিল্পের কাঁচামাল, রং, সুতাসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম বৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। অন্যদিকে হাটগুলোতে শাড়ির চাহিদা কমায় লোকসানের মুখে সিরাজগঞ্জে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এ অবস্থায় সরকারিভাবে বাজার তদারকির দাবি জানিয়েছেন জেলার ব্যবসায়ী নেতারা।
সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ তাঁতপল্লির ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের সরকার। দীর্ঘদিন ধরে তিনি তাঁতের শাড়ি তৈরির সঙ্গে জড়িত। একসময় তার কারখানায় ৪৫টি তাঁত থাকলেও লোকসানের মুখে ৩০টি বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন ১৫টি তাঁত দিয়ে ব্যবসাটি ধরে রাখার চেষ্টা করছেন তিনি।
তাঁত ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের সরকার বলেন, ‘শ্রমিকদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারি না। সেই সঙ্গে সুতাও কিনতে পারি না। এর জন্য ব্যবসায় সংকুচিত করে আনি। কিন্তু তা করেও কোনো লাভ হয়নি। বর্তমানে আমাদের অবস্থা আরও খারাপ।’
তার মতো একই অবস্থা জেলার বেলকুচি, শাহজাদপুর, এনায়েতপুর ও উল্লাপাড়া উপজেলার তাঁত মালিকদের। দফায় দফায় সুতা, রংসহ তাঁতশিল্পে ব্যবহৃত সরঞ্জামের দাম বাড়ায় বিপর্যয়ের মুখে তাঁত মালিকরা। সেই সঙ্গে দেশের কাপড়ের বাজারগুলোতে শাড়ির চাহিদা কমে গেছে। এদিকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে শাড়ির উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। সব মিলিয়ে লোকসানের মুখে অনেক তাঁত মালিক কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে এক তাঁত মালিক বলেন, ‘আমাদের ব্যবসায়ের পরিস্থিতি অনেক খারাপ। কাপড়ের দাম আগে যে রকম ছিল, এখনও সে রকমই আছে। কাপড়ের দাম আর বাড়েনি।’
কারখানা বন্ধ হওয়ায় অনেক তাঁত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এক তাঁত শ্রমিক বলেন, ‘আগে যেখানে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতাম, এখন তা কমে ১ হাজার ৫০০ টাকায় নেমে এসেছে। এতে আমাদের চলার মতো পরিস্থিতি আর নেই।’
এ অবস্থায় সারা বছর সরকারিভাবে রং ও সুতার বাজার তদারকি ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাসের পরিচালক সঞ্জয় সাহা।
সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পকে এরই মধ্যে ব্র্যান্ডিং পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। জেলার প্রায় ৫ লাখ পাওয়ার লুম ও হ্যান্ডলুমে উৎপাদিত হচ্ছে উন্নতমানের শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা।