Sunday , December 22 2024
Breaking News

ঢাবি অধ্যাপকের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশি, ছাত্র সংগঠনগুলোর নিন্দা

 বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী কর্তৃক প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিভাগীয় অফিসে গিয়ে ব্যক্তিগত নথিপত্র তল্লাশির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।

গতকাল বুধবার সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, গনতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী এবং প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ আলাদা আলাদা বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। 

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাবি শাখার সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক ও সাধারণ সম্পাদক আরাফাত সাদ এক যৌথ বিবৃতিতে নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান সবসময়ই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে সরাসরি অংশগ্রহণও করেছেন। ফলে সবসময়ই তিনি শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চক্ষুশূল হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রায়ই তাকে হেনস্তা করার চেষ্টা চালিয়েছে। ফলে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের মতো গনতন্ত্রমনা শিক্ষক যখন প্রশাসনের চোখে আঙ্গুল দিয়ে তাদের গাফিলতি দেখাচ্ছে তখন প্রশাসন স্বৈরাচারী কায়দায় তাকেই মানসিকভাবে হয়রানি করতে চাচ্ছে। এতে প্রশাসনের জনবিরোধী বৈশিষ্ট্য উন্মোচিত হয়।’ 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের রক্ষী বাহিনী হিসেবে কাজ করছে উল্লেখ করে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একজন শিক্ষকের সাথে এমন আচরণ কোনো ভাবেই কাম্য নয়। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের রক্ষী বাহিনী হিসেবে কাজ করছে।’

এছাড়া শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দেশের মানুষের গণতন্ত্র ও অধিকার রক্ষায় দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহবান জানায় সংগঠনটি।

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করা ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনকে অবাধ সন্ত্রাসের সুযোগ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর বিরুদ্ধে নূন্যতম প্রতিবাদ হলে সেটাকেও দমন করার জন্য নানা অপকৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খানকে হয়রানির অপচেষ্টা কার্যত প্রতিবাদের ভাষা দমনের আরেকটি কুৎসিত পন্থা। বিগত সময়েও কিছু বিবেকবান শিক্ষকরা ক্ষমতাসীনদের দলদাস না হয়ে স্বাধীন মতামত প্রকাশ করলে তাদের নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করা হয়েছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানীর অপসারণের দাবি জানিয়ে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ঢাবি শাখার বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ক্যাম্পাসজুড়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের উপর সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ হামলায় মৌন ভূমিকা পালন করা এবং নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককেই হয়রানি করার ঘটনায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী নিজেকে একজন নিপীড়ক হিসাবে পরিচিত করিয়েছেন। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানীকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির দাবি জানাই।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এখতিয়ার বহির্ভুতভাবে প্রক্টর অফিস কর্তৃক অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের ব্যক্তিগত ফাইল তল্লাশি আইন ভঙ্গের সামিল। এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়, ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদিকুল ইসলাম সোহেল, ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড, ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনয়ন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সভাপতি তাওফিকা প্রিয়া এবং ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার।

About Banglar Probaho

Check Also

আ.লীগ ও সহযোগীদের কাছে লোক চেয়েছে যুবলী

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আগামীকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় জমায়েতের উদ্যোগ নিয়েছে যুবলীগ। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি যখন …

Leave a Reply

Your email address will not be published.