গবেষণায় দেখা গেছে দৈনিক তিন থেকে চার কাপ চা পান ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
তবে দুধ চিনি যুক্ত চা পান থেকে এই সুবিধা মিলবে না।

বাঙালির জীবনে চা ছাড়া যে কিছুই জমে না। সকালে নাস্তায়, অফিসের কাজের ফাঁকে কিংবা আড্ডায় চা থাকতেই হবে।
আর এই পানীয় যে ডায়াবেটিস দূরে রাখতে তার প্রমাণ মিলেছে সাম্প্রকিত এক গবেষণায়। যদিও এই পর্যবেক্ষণে জীবন যাপনের অন্যান্য অভ্যাসগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
স্টকহোম সুইডেনে অনুষ্ঠিত ‘ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য স্টাডিজ অফ ডায়াবেটিস’য়ের বার্ষিক সম্মেলনে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হচ্ছে, দৈনিক খাদ্যাভ্যাসে চা থাকাটা ডায়াবেটিস থেকে দূরে রাখার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।
এই সংগঠন ‘চায়না হেল্থ অ্যান্ড নিউট্রিশন সার্ভে’র ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩শ’ ১১ জন চীনা জনগণের ওপর ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত করা ১৯টি গবেষণার তথ্য পর্যালোচনা করে।
মেডিকেল নিউজ টুডে ডটকম’ এই গবেষণার ফলাফল থেকে জানায়, যারা দৈনিক এক থেকে তিন কাপ চা পান করেছেন তাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস’য়ের আশঙ্কা কমতে দেখা গেছে ৪ শতাংশ। আর যারা দৈনিক চার কাপ বা তারও বেশি পরিমাণে চা পান করেছেন তাদের ঝুঁকি কমেছে ১৭ শতাংশ।
তবে দুধ-চিনি যুক্ত চা নয়, গবেষকরা এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের চা যেমন- গ্রিন টি, উলং টি এবং ব্ল্যাক টি গ্রহণের কথা জানায়।
‘দ্য নরিশ ব্রেইন’ বইয়ের লেখক ও ক্যানসাস’য়ের ‘ক্লিনিকাল ডায়েটিশিয়ান শেরিল মুসাত্তো ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “গবেষণায় চার কাপ বা তারও বেশি চা পান করায় ১৭ শতাংশ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমতে দেখা গেলেও কেনো বা কীভাবে তা হল সেটা জানা যায়নি এই গবেষণা থেকে। ধারণা করা হচ্ছে, চায়ে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ‘পলিফেনল’য়ের অবদান এটি। এই উপাদান প্রয়োজনীয় ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ যোগায় শরীরে, যা শরীরের কোষকে রক্ষা করে ক্ষয় ও প্রদাহ থেকে।”
তিনি আরও বলেন, “গ্রিন টি’য়ে থাকে ‘ক্যাটেচিন্স’ নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’। এটি শরীরের কোষগুলোর ‘ইন্সুলিন’য়ের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দেয় এবং কমায় ‘ইন্সুলিন রেজিস্ট্যান্স’।”
এছাড়াও ‘ব্ল্যাক টি’ ও ‘উলং টি’ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর বলে দেখা গেছে এই গবেষণায়।
তবে পুরো ব্যাপারটা ওই ব্যক্তির অন্যান্য জীবনযাত্রার অভ্যাসের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। যেমন- চায়ে যদি চিনি মেশানো হয় তবে উপকারিতা অনেকটা কমে যায়।
আবার তাদের খাদ্যাভ্যাস যদি অস্বাস্থ্যকর হয় তবে শুধু চা পান করে কোনো উপকার আশা করাও উচিত হবে না। স্থূলকায় ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তাই চায়ের কোনো উপকারিতা নেই।