Tuesday , October 8 2024
Breaking News

কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সৈকতেকে আন্তর্জাতিক মানের পরিণত করার উদ্যোগ

কক্সবাজার এবং কুয়াকাটায় ভাঙন রোধ করে স্থায়ী প্রকল্পের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের সৈকতে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মানের সৈকত নির্মাণ করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করাসহ দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক এমপি। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে সরেজমিন পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এএম মিজানুর রহমান জানান, গত ৫ বছরে কুয়াকাটা সৈকতের প্রায় ২শ’ ফুট সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। সৈকতের পূর্ব দিকের সৌন্দর্য ফয়েজ মিয়ার বাগান পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেছে। একই পাশে জাতীয় উদ্যানের (ইকোপার্ক) পাকা স্থাপনাসহ দুই তৃতীয়াংশ এবং বনবিভাগের ঝাউগাছসহ বিপুল সংখ্যক গাছপালা সাগরে বিলীন হয়েছে। সৈকতের পশ্চিমে পাবলিক টয়লেট, ঝিনুক মার্কেট ও শুটকি মার্কেটের ২ শতাধিক দোকান, স্কাই কটেজ নামে একটি আবাসিক হোটেল পুরোপুরি এবং সি-কুইন নামে একটি হোটেলের ২টি ভবনের একটি বিলীন হয়ে গেছে। এখন পূর্ব দিকের মসজিদ এবং মন্দির ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা জানান, গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহত ভাঙনে কুয়াকাটা সৈকত ব্যাপক ভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। সব শেষ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, অতিবৃস্টি এবং জোয়ারের প্রভাবে সাম্প্রতিক সময়ে সৈকতের অন্ত ৫০ ফুট জায়গা স্থাপনাসহ বিলীন হয়েছে। এখন আর জোয়ারের সময় সৈকত পাওয়া যায় না। মূল সড়কের উপর দাড়িয়ে সমূদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হয়। কিন্তু সড়কে বেশি সংখ্যক পর্যটক এক সাথে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। এ কারনে দেশী-বিদেশী পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ পায় না। তারা বিরক্ত হয়। কুয়াকাটা সৈকত স্থায়ীভাবে রক্ষাসহ সৌন্দর্যবর্ধন করে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট করতে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা।

কলাপাড়ার সাংবাদিক উত্তম কুমার হালদার জানান, কুয়াকাটা সমূদ্রের অব্যাহত ভাঙ্গন রোধে দেড় বছর আগে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে জিও টিউব ফেলে পানি উন্নয় বোর্ড। কিন্তু জিও টিউব নিম্নমানের দেয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেই উদ্যোগ অনেকটা বিফল হয়েছে। জোয়ারের সময় ঢেউয়ের তোরে জিও টিউব থেকে বালু বের হয়ে যাওয়ায় ৩ কোটি টাকা সমুদ্রের পানিতে মিশে গেছে। গত শনিবার কুয়াকাটায় সমূদ্রের ভাংগন পরিস্থিতি দেখতে কুয়াকাটা সৈকত পরিদর্শন করেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কুয়াকাটা ও কক্সবাজার সমূদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২ বছর আগে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক নেদারল্যান্ড গিয়েছিলেন। নেদারল্যান্ড তাদের সি-বিচগুলো রক্ষা করে কিভাবে জনগনের জন্য আকর্ষনীয় করেছে সেটা তারা অবলোকন করেছেন। সে অনুযায়ী কুয়াকাটা ও কক্সবাজার সৈকত রক্ষাসহ সৌন্দর্য বর্ধনের সমীক্ষা শেষ করা হয়েছে। সেই আদলে উন্নয়ন প্রস্তাবনা তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প পাঠানো হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন পেলে প্রকল্প যাবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (একনেক)। এই প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রী সন্মতি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় প্রকল্প অনুমোদন দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কুয়াকাটা ও কক্সবাজার সৈতক ভাঙন থেকে রক্ষা করে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করার কাজ শুরু হবে।

তবে স্থায়ী এই প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে সাময়িক ভাঙন রোধের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান ও কুয়াকাটা পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লার দাবীর প্রেক্ষিতে কুয়াকাটা সৈকতের ১.৭৫ কিলোমিটার এলাকায় জিও টিউব ফেলার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী।

পানি উন্নয়ন বোর্ড দক্ষিণাঞ্চল জোনের প্রধান প্রকৌশলী মো. হারুন-অর রশিদ জানান, স্থায়ী প্রকল্প পাস হওয়ার আগ পর্যন্ত সাময়িক সময়ের জন্য সৈকত রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। সে অনুযায়ী সমীক্ষা চলছে। সৈকত রক্ষাসহ স্থানীয় জনগণের জন্য যেটা উপকার হবে সে অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী মো. হারুন-অর রশিদ।

About Banglar Probaho

Check Also

আ.লীগ ও সহযোগীদের কাছে লোক চেয়েছে যুবলী

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আগামীকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় জমায়েতের উদ্যোগ নিয়েছে যুবলীগ। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি যখন …

Leave a Reply

Your email address will not be published.