গাজীপুরের শ্রীপুরে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সোহানকে (১০) অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি আজিজুল ইসলামকে (২০) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১ গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের সদস্যরা।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার কালিদাস বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব-১ গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আজিজুল শ্রীপুর উপজেলার মাস্টারবাড়ী (বেতজুড়ী) গ্রামের সবুর উদ্দিন ওরফে এমসি বাবুর্চির ছেলে। অভিযুক্ত আজিজুলের বিরুদ্ধে অনেক আগেই শ্রীপুর থানায় একটি ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা রয়েছে। ওই মামলায় সে জামিনে ছিল। স্থানীয়রা আজিজুলকে মাদকসেবী হিসেবেও অভিযুক্ত করেছে।
নিহত সোহান শ্রীপুর পৌরসভার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকার আব্বাস আলীর ছেলে এবং ওই এলাকার আবুল প্রধান কিন্ডার গার্টেনের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
র্যাব-১ গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত ০৩ আগস্ট সন্ধ্যায় শ্রীপুর পৌরসভার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকার নিজ বাড়ি থেকে শিশু সোহান নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর তার স্বজনেরা সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ৬ আগস্ট শ্রীপুর থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পরবর্তীতে সোহানের স্বজনেরা ৩০ আগস্ট শিশু সোহানের অনুসন্ধানের জন্য আইনগত সহযোগিতা চেয়ে র্যাব বরাবর আবেদন করে। পরে চৌকস একদল র্যাব সদস্য ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার কালিদাস বাজার থেকে আসামি আজিজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
সোহানের বাবা আব্বাস আলী জানান, তার ছেলে সোহান গত ৩ আগস্ট বিকেলে থেকে নিখোঁজের ঘটনায় তিনি শ্রীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন। এক মাস পর সোমবার (৩১ আগস্ট) সকালে গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে ময়লার স্তূপে স্থানীয়রা মানব কঙ্কাল দেখতে পান। সেখানে গিয়ে কঙ্কালের পাশে থাকা হলুদ শার্ট, জিনসের প্যান্ট ও জুতা দেখে তিনি সেটিকে তার শিশু সন্তান সোহানের কঙ্কাল বলে দাবি করেন।
সোহানের মা নাজমা বেগম জানান, গত ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকার সফর উদ্দিনের ছেলে আজিজুল হকের সঙ্গে সোহানকে স্থানীয় ওয়ালটন মোড় এলাকায় দেখেছে বলে এলাকাবাসী তাদের জানিয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, খবর পেয়ে মানব কঙ্কালটি উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একইসাথে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের সুপারিশ করা হয়েছে। কঙ্কালটি প্রকৃতই সোহানের কি-না তা নিশ্চিত হতে তার ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। এ ঘটনায় শিশু সোহানের মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে সোমবার রাতে গ্রেফতার আজিজুল ইসলামসহ ৮ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করে।