চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে বড় দুটি গণসমাবেশ আয়োজনের খুলনার কর্মসূচিতে গণজোয়ার সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন বিএনপির নেতারা। খুলনার সমাবেশে লাখো মানুষের উপস্থিতি ঘটানোর আশা দলটির নেতাদের। এ জন্য চলছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি ও প্রচারণা। কর্মসূচি সফল করতে করা হয়েছে ১৬টি উপকমিটি। দফায় দফায় বৈঠক করে নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছেন কমিটির সদস্যরা।
খুলনা নগর বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা জোর প্রস্তুতি অব্যাহত রেখেছি। খুলনায় আশা করি লাখখানেকের বেশি লোক হবে। চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের চেয়ে এখানকার জমায়েত আরও বড় হবে।’
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে ২২ অক্টোবর খুলনায় ওই বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। খুলনায় কর্মসূচি পালিত হবে ডাকবাংলা মোড় ও ফেরিঘাট মোড়ের মাঝের সোনালী ব্যাংক চত্বরে।
সমাবেশের জন্য বিএনপি প্রথমে নগরের হাদিস পার্কের অনুমতি চেয়েছিল। তবে অনুমতি মেলেনি। এ বিষয়ে নগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পুলিশ কমিশনারের কাছে ভেন্যু হিসেবে হাদিস পার্কের কথা বলেছিলাম। তিনি মেয়র সাহেবের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। মেয়র হাদিস পার্কে অনুমতি না দিয়ে সোনালী ব্যাংক চত্বরে করতে বলেন। পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি জানিয়ে দরখাস্ত দিয়েছি। আমরা আশা করছি, সোনালী ব্যাংক চত্বরে সমাবেশ করার ক্ষেত্রে আমরা সব মহলের কাছে সহযোগিতা পাব। মোটকথা, সব মহলের কাছে আমরা সহযোগিতা চাই। এমনকি শাসক দলের কাছে। আমরা চাই খুলনায় শান্তিপূর্ণভাবে একটা রাজনৈতিক সমাবেশ করতে।’
এদিকে এ সমাবেশ সফল করার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা করছে বিএনপি। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বাগমারা চেয়ারম্যান বাড়ি ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির প্রস্তুতি সভা হয়েছে। পাশাপাশি সমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে খুলনা নগরে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। গতকাল ডাকবাংলো মোড়, বড় বাজার, হেলাতলা মোড় হয়ে কে ডি ঘোষ রোড পর্যন্ত এলাকায় সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও পথচারী, যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের মধ্যে লিফলেট বিলি করা হয়।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য এহতেশামুল হক বলেন, সব বাধা–বিপত্তি, হুমকি, প্রলোভন, গুজব ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করার অঙ্গীকার করেছেন দলের নেতা-কর্মীরা। দলীয় কর্মী ছাড়াও অবৈধ সরকারের দুঃশাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট সাধারণ মানুষও এতে যোগ দেবেন।
এর আগে গত শুক্রবার খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিভাগের ১০ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ডেকে বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিভাগীয় গণ সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু এবং অপর ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী।
এদিকে বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গণসমাবেশের মঞ্চে সকাল থেকেই জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) শিল্পীরা জাতীয় সংগীত, দলীয় সংগীত, গণসংগীত পরিবেশন করবেন। সরকার পতনের দাবিতে আবৃত্তি করা হবে বিদ্রোহী কবিতা। ঢাকা থেকে জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতারা আসবেন খুলনায়। এ ছাড়া বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে জাসাসের শিল্পীরা কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বলে জানান খুলনা মহানগর জাসাস আহ্বায়ক নূর ইসলাম।