বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতকে গত জুনে মুম্বাইয়ের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। সুশান্তের অস্বাভাবিক ভাবে মারা যাওয়ার বিষয়ে সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এরপর নতুন করে জেরা করা হচ্ছে সন্দেহভাজন সবাইকে।
এদিকে সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই অকারণে পরিচালক ও প্রযোজক মহেশ ভাটের নাম কেন জড়ানো হচ্ছে, এবার সেই অভিযোগ করেই আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সুশান্ত সিং রাজপুতের জিমের বন্ধু সুনীল শুক্লর বিরুদ্ধে মামলার পদক্ষেপ নিতে চলেছে তারা। সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে সুনীল দাবি করেন, রিয়া চক্রবর্তীর বাবা ইন্দ্রজিত চক্রবর্তী এবং মহেশ ভাট দুজনে পরিকল্পিতভাবে সুশান্তকে খুনের ষড়যন্ত্র করছেন। সুনীল শুক্লর ওই দাবির পরই জোর শোরগোল শুরু হয়ে যায়। এরপরই ভাট পরিবারের তরফে খবর পাওয়া যায়, তারা সুনীল শুক্লর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন।
কোনো রকম তথ্য প্রমাণ ছাড়া মহেশ ভাটের বিরুদ্ধে কেন এই ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন পরিচালকের দুই মেয়ে পূজা ভাট এবং আলিয়া ভাট। শুধু তাই নয়, শুধুমাত্র সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কেন মহেশ ভাটের বিরুদ্ধে তোপ দাগা হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আলিয়ারা। পাশাপাশি সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে যেভাবে এক নাগাড়ে মহেশ ভাটকে আক্রমণ করা হচ্ছে, এবার তা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন বলেও দাবি করে পরিবার।
এদিকে, চলতি সপ্তাহে ডিআরডিওর গেস্ট হাউসে ডেকে সুশান্তের বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানি, পাচক নীরজ সিংহ এবং পরিচারক দীপেশ সবন্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। তারপর ওইদিন বেলা ৩ টার দিকে ওই তিনজনকে সঙ্গে নিয়ে সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে যায় সিবিআইয়ের তদন্ত দলটি।
তাদের সঙ্গে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং মুম্বাই পুলিশের যেসব অফিসার এতদিন তদন্ত করেছেন, তারাও ছিলেন। ১৪ জুন যখন বান্দ্রার ফ্ল্যাটে সুশান্তের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়, তখন ওই তিনজনই সেই ফ্ল্যাটে ছিলেন। এর আগে গত শুক্রবার নীরজ ও সিদ্ধার্থকে এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।
সুশান্তের বাড়ির পরিচারক দীপেশ সবন্ত জানান, লকডাউন চলাকালে অনেক দেরি করে ঘুমোতে যেতেন সুশান্ত ও তার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী। ঘুম থেকে উঠতেনও দেরি করে।
দুপুরে খাওয়ার আগে দীর্ঘক্ষণ যোগব্যায়াম করতেন তারা। অনেক সময়ে ছাদে গিয়েও ব্যায়াম করতেন। তখন দীপেশকে সুশান্ত নির্দেশ দিতেন– ছাদে যোগব্যায়ামের জিনিসপত্র ও মিউজক সিস্টেম দিয়ে আসতে। সুশান্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুর দিন কয়েক আগে রিয়া সুশান্তের ফ্ল্যাট থেকে চলে যান। সেই দিনটি সম্পর্কে দীপেশকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নানা প্রশ্ন করেন গোয়েন্দারা। দীপেশ জানান, ওই দিন দুপুরে খাওয়ার আগেই সুশান্তের বাড়ি থেকে চলে যান রিয়া। সঙ্গে ছিলেন তার ভাই শৌভিক চক্রবর্তী। সে দিন দুপুরে আর খাওয়া-দাওয়াই করেননি। সারাক্ষণ ঘরে চুপচাপ বসেছিলেন সুশান্ত।